রামগঞ্জে সমকামিতার অভিযোগে বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে যুবককে এলাকা ছাড়াতে বাধ্য করছে এলাকাবাসী - pratidinkhobor24.com

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad




Wednesday 2 November 2022

রামগঞ্জে সমকামিতার অভিযোগে বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে যুবককে এলাকা ছাড়াতে বাধ্য করছে এলাকাবাসী


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের পানিয়ালা মোল্লা বাড়ির মফিজুল ইসলামের দ্বিতীয় ছেলে আখতারুজ্জামান বয়স (৩০)কে সমকামিতার দায়ে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করছে এলাকাবাসী ও মৌলবাদী সংগঠনের লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং সকাল সাড়ে ১১ টায় আখতারুজ্জামানের নিজ বাড়িতে। স্হানীয় সূত্রে জানাযায়, আখতারুজ্জামান তার ফেইসবুক ফেইজে সমকামিতা স্বপক্ষে একটি লেখা পোস্ট করে। এনিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।এতে মৌলবাদী কিছু সংগঠন উস্কানি দিয়ে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে তার বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে এবং আখতারুজ্জামানকে ব্যাপক মারধর করে তার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে সমকামি নিয়ে ফেইজবুক পোষ্টটি ডিলিট করে মোবাইল নিয়ে যায় এবং তার পরিবারের লোকজনকে চাপ সৃষ্টি করে জীবনের হুমকি দিয়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করে।

এব্যাপারে সরজমিনে আখতারুজ্জামানে মা আয়েশা সিদ্দিকা ও পিতা মফিজুল ইসলামের সাথে কথা বললে তারা জানায়, আমাদের ছেলে আখতারুজ্জামানের বয়স যখন ১০ বছর তার হাটা চলা কথা বলার ধরন ছিল অনন্য রকম সে সবার থেকে আলাদা কিন্তু তখন বুঝে উঠতে পারেনি যে তার মাঝে এমন একটি নিকৃষ্টতর সমকামীতার পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটছে। আমরা বুঝতে পারি সে যখন ২০১৫ সালে ঢাকায় যায়। তার কারনে আমরা আজ সমাজে ঘৃণিত।
তার পরিবারের লোকজন লজ্জায় নিজেকে লুকিয়ে নেয় আর কিছুই বলতে রাজি না।
২০১৫ সালে কি ঘটনা ঘটে ছিলো এব্যাপারে ঢাকার মিরপুর তার কর্মস্হলে গেলে তার কয়েকজন সহকর্মী জানান, ঢাকায় মিরপুর ইউনিলিভার একটা কম্পানিতে মার্কেটিংয়ে চাকরি করতো। সেখানে নাজমুল নামের এক যুবক সমকামী ছিল তাদের দুইজনের মাঝে সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং শারিরিক সম্পর্ক হয়। তারা দুজন একই রুমে থাকতো। কিন্তু একদিন পাশের রুমমেটদের নজরে আসে বিষয়টা তারা বিষয়টি বুঝতে পেরে রুমের মধ্যে দড়ি দিয়ে বেধে বেধড়ক মারধর করে।
আখতারুজ্জামান নামের যুবকের বাম হাতে সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়ে দেয় এবং ডান পায়ের হাটুতে আঘাত করে এবং ডান পায়ের আঙ্গুল পা দিয়ে ভেঙ্গে দেয়। মিরপুর এলাকা থেকে তাদের বের করে দেয়। পরে এই নিকটস্থ থানায় মামলা করতে গেলে মামলাটি নেওয়া হয়নি কারন সমকামী নিয়ে আইন বাংলাদেশে নেই। উল্টো মামলার ভয় দেখিয়ে অপমান করে। নিরুপায় হয়ে তারা থানা থেকে বের হয়ে যায়। পরে একটি হসফিটালে চিকিৎসা নিতে হয়। তার মা বাবা ঢাকায় এসে তাকে নিজ গ্রাম লক্ষীপুর রামগঞ্জ নিয়ে যায়।

এব্যাপারে আখতারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে সে জানায়,ঢাকার ঘটনাটি তার নিজ গ্রামে পুরো ছড়িয়ে পড়ে। তাকে অপমান, হেয় ও হাসাহাসি করতে থাকে। তার পরিবার এই লজ্জা থেকে বাচার জন্য তারা গলায় দড়ি দিবে বলে জোর করে ইমোশনাল ব্যাকমেইল করে ২৭ মার্চ ২০১৯ সালে একটি মেয়ের সাথে বিয়ে দেয়।
পরিবার থেকে বাচ্চা নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ায় প্রায় এক বছর পর ১৮ নভেম্বর ২০২০ইং তাদের একটি বাচ্চা হয়। তার পরেও যখন তার পরিবার ও তার স্ত্রী দেখলো তার স্বামী তার প্রতি আকৃষ্ট না তার মন মানুষিকতা আলাদা সমকামী সে সেখান থেকে বেরুতে পারবেনা তাই তার ছেলেকে নিয়ে তার স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে চলে যায়।
যদিও তাদের মধ্যে তালাক হয়নি তবে দুজনের এরপর থেকে আর সাক্ষাৎ হয়নি।
এব্যাপারে স্হানীয় ইউপি সদস্য মহসিন মিয়া ও এলাকার মাতব্বর হোসেন আহমেদ জানায়, আমরা তাকে এলাকায় থাকতে দিতে পারিনা। কারন সে এলাকায় থাকলে এলাকা নষ্ট করে ফেলবে।যুবকরা নষ্ট হয়ে যাবে তাই তাকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার সংগঠনের রামগঞ্জ উপজেলার সভাপতি লিটন সরকার বলেন, বাংলদেশে সমকামিতার আইন নেই বলেতো একজনের বেচে থাকার অধিকার আমরা হরন করতে পারিনা। সবার বাঁচার অধিকার রয়েছে।























No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Pages