ধর্ষিতার টাকা মাতাব্বরদের পকেটে নাগরপুরে ধর্ষণে সহযোগীর সাথে ধর্ষিতার বিয়ে - pratidinkhobor24.com

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad




Friday 23 April 2021

ধর্ষিতার টাকা মাতাব্বরদের পকেটে নাগরপুরে ধর্ষণে সহযোগীর সাথে ধর্ষিতার বিয়ে



মোঃ আব্দুর রাজ্জাক রাজা 
নাগরপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি: 
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ধর্ষেণের শিকার হয়েছে এক কিশোরি। সোমবার নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের চেচুয়াজানী গ্রামে ঘটনাটি  ঘটেছে। হেলাল মাষ্টারের নেতৃত্বে শালিশি বৈঠকে জরিমানার মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করে নিরিহ যুবকের সাথে জোড় পূর্বক বিয়ে।  ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীর পিতা ৫ জনকে আসামী করে নাগরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। 

 

এলাকা সূত্রে জানা যায়, ইরতা গ্রামের ডিভোর্সকৃত মেয়ের সাথে চেচুয়াজানী গ্রামের নুর আলমের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের টানে শুক্রবার সারা দিন বিভিন্ন জায়গায় অটো যোগে নুর আলম ও তার সহযোগী সহ ঘুরাফেরা করে। সন্ধা ৭টার দিকে চেচুয়াজানী গ্রামের রাব্বেলের সেলো মেশিন ঘরে নুর আলম তার  ৪ বন্ধুর সহযোগীতায় মেয়েটিকে ধর্ষন করে। রাত গভীর হলে নুর আলম মেয়েটিকে রাস্তায় রেখে পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে মেয়েটি কোন উপায় না পেয়ে বিয়ের দাবীতে নুর আলমের বাড়িতে অবস্থান করে। তিন দিন ওই বাড়িতে অবস্থান করার পর মেয়ের বাবা নাগরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।  ইতি মধ্যে নুর আলমের সাথে মেয়েটির আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

 

চেচুয়াজানী গ্রামের অতিউৎসাহী হেলাল মাষ্টার, হাকিম মিয়া ও সাবেক বাদশা মেম্বার সহ মাতাব্বরগণ মেয়ের বাবাকে চাপ প্রয়োগ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করে। গত ১৯.০৪.২১ সোমবার রাত ১১টার দিকে চেচুয়াজানীর মো. শুক্কুন মিয়ার বাড়িতে কথিত মাতাব্বর হেলালের নেতৃত্বে শালিশি বৈঠক হয়। অর্থের বিনিময়ে প্রকৃত দোষীকে আড়াল করে শালিশি বৈঠক করা হয়। বৈঠকে চেচুয়াজনী গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে নুর আলমকে ১ লক্ষ টাকা এবং ধর্ষণে সহযোগীতা করায়  মো. বাদল মিয়ার ছেলে মনির, মো. রহিম মিয়ার ছেলে রাব্বেল, মো. সেলিম মিয়ার ছেলে নাছির ও বাবুল মিয়ার ছেলে রমেজ কে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এদের মধ্যে বাবুল মিয়ার ছেলে রমেজ অতিসয় দরিদ্র ও নিরহ হওয়ায় জরিমানার টাকা দিতে অপারকতা প্রকাশ করে। রমেজের পরিবার জরিমানার টাকা দিতে  না পারায় উল্লেখিত মাতাব্বরগণ জোড় পূর্বক মেয়েটি কে রমেজের সাথে বিয়ে দেন। জরিমানার সম্পূর্ণ টাকা মেয়ে কে দেবার কথা থাকলেও মাত্র ১ লক্ষ টাকা রমেজের বড় ভাই মিজানের হাতে তুলে দেন কথিত মাতাব্বরগণ। 

 

রমেজের বড় ভাই মিজানুর বলেন, আমার ভাই এই ধর্ষণের সাথে জড়িত না। শুধু নুর আলমের সাথে থাকার কারণে এবং আমাদের দরিদ্রতার সুযোগে মেয়েটি কে আমার ছোট ভাইয়ের সাথে জোড় করে বিয়ে দেন। জরিমানার সব টাকা দেবার কথা থাকলেও আমার হাতে মাত্র ১ লক্ষ টাকা ধরিয়ে দেন। বাকী টাকার জন্য যোগাযোগ করা হলে বিভিন্ন তালবাহানা দেখায়। 

 

ভুক্তভোগীর পিতা বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে আমি নাগরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। পরে চেচুয়াজানী গ্রামের মাতাব্বররা বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শালিশি বৈঠক করে। আমার মেয়ে কে রমেজের সাথে বিয়ে দেন। তবে কার কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে তা আমাকে জানায়নি। 

 

বৈঠকে নেতৃত্ব প্রদান কারি হেলাল মাষ্টার বলেন, ওই শালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম না। এলাকার মানুষ আমার বিরোদ্ধে মিথ্যে কথা বলছে। 

 

অভিযোগের তদন্তকারি এসআই মো. আরফান খান বলেন, অভিযোগ পেয়ে তদন্তের জন্য আমি ঘটনা স্থলে যাই। বিষয়টি সমাধানের জন্য এলাকবাসী সময় নেন। পরে রমেজের সাথে মেয়েটিকে বিয়ে দিয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Pages