রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি ঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আইরিন আক্তার (১৮) নামের অনার্স পড়ুয়া এক ছাত্রী প্রেম করে বিয়ে করায় মা-বোনের বর্বর নির্যাতনে আত্মহত্যা করে সে।
পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল পাঠায়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে উপজেলার ৪নং ইচাপুর ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের মিঝি বাড়িতে। খবর পেয়ে রামগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই ওয়ালী উল্লাহ ফোর্স নিয়ে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেছে। আইরিন রামগঞ্জ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মেনেজমেন্ট অনার্স ২য় বর্ষে ছাত্রী বলে জানা গেছে। সৃষ্ট ঘটনায় রামগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইচাপুর ইউপির নারায়নপুর গ্রামের মিঝি বাড়ির নুর হোসেনের মেয়ে আইরিন আক্তারের সাথে ৯নং ভোলাকোট ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের জাকির পাটোয়ারীর ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ওমর ফারুক হিমুর সাথে গত ৫অক্টোর ২০২০ইং সালে লক্ষ্মীপুর কোর্টে গিয়ে ৩লক্ষ টাকা মোহরানার মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এরপর তারা পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে সংসার জীবন শুরু করে। একপর্যায়ে আইরিনের বড় বোন শারমিন ও তার মা জেসমিন আক্তার অনেক খোজাখুজি করে বিয়ের ১২দিন পর কৌশলে তাদের দুজনের বিয়ে মেনে নিবে বলে আইরিনকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর বোন শারমিন ও মা জেসমিন ওই ছাত্রীকে বেদম মারধর করে প্রতিদিন নির্যাতন চালাতে থাকে। পরে আইরিনের মা ও বোন মিলে আইরিনকে জোরপূর্বক গত ২৬ জানুয়ারী ২০২১ইং তারিখে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতের মাধ্যমে ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক হিমুকে তালাকনামা প্রদান করে বাড়িতে নিয়ে আসে। তালাকের পরেও আইরিন ছাত্রলীগ নেতা হিমুর কাছে আবারও চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে বড়বোন শারমিনের নির্দেশে মা জেসমিন আক্তার নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়ে আইরিনের মাথার ছুল কেটে দেয়।
এব্যাপারে আইরিনের তালাকপ্রাপ্ত স্বামী ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক হিমু জানান, ২০১৮ইং সনে ২২এপ্রিল আইরিনের সাথে পরিচয়ের পর থেকে আমাদের সম্পর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে সেটা বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। আইরিন আত্বহত্যা করতে পারেনা। তাকে আত্বহত্যা করতে বাদ্য করা হয়েছে।
আইরিনের মা জেসমিন আক্তার জানান, আমরা আইরিনের চুল কাটিনি। সে নিজের চুল নিজে কেটেছে। গত ২মাস থেকে তার মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। বহু কবিরাজের কাছে নিয়েও কোন ফল পাইনি। আর আমার মেয়ে কাউকে কোন বিয়ে করেনি। বিয়ের বিষয়টা সঠিক নয়।
রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান,আইরিনের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। কলেজছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ইউডি মামলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment