রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর ) প্রতিনিধিঃ শিক্ষকদের আবাসনের জন্য ডরমেটরী থাকলেও লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসটি গত পনের বছর ধরে দখল করে রেখেছে কলেজটির শিক্ষকরা। এতে দূর দুরান্ত থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের থাকতে হচ্ছে মেস কিংবা স্বজনদের বাড়ীতে। আবেদন করেও ছাত্রাবাসে থাকার অনুমতি পাচ্ছে না তারা।
অন্যদিকে শিক্ষকদের বেতনের সাথে প্রতিমাসেই বাড়ী ভাড়া দিচ্ছে সরকার। শিক্ষকরা সরকারি ভবনে বসবাস করছেন নিয়মিত কিন্তু ভাড়া বাবত সরকারি কোষাগারে কোন অর্থ জমা দিচ্ছেন না। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলার সচেতন মহল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে কলেজের এ ছাত্রাবাসটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে কয়েক বছর এখানে থাকার সুযোগ পেয়েছে ছাত্ররা। ২০০৫ সাল থেকে তাদের থাকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ ছাত্রদের। প্রায় পনের বছর ধরে এ ছাত্রাবাসে ছাত্রদের ঠাঁই হয়নি। থাকছেন ১০/১২ জন শিক্ষক। ব্যবহারের উপযোগী নয় অযুহাতে ছাত্রদের থাকতে না দিলেও শিক্ষকরা থাকছেন ঠিক ভাবেই। বর্তমানে কলেজটিতে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। স্থানীয় ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা চাটখিল, হাজিগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, রায়পুর, শাহরাস্তি ও লক্ষ্মীপুরের ছাত্ররা এ কলেজে পড়ালেখা করছে।
কয়েকজন ছাত্র জানায় কলেজ ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ না থাকায় প্রতিদিন বাড়ী থেকে আসা যাওয়া করতে হয়। অনেক সময় সড়কে পরিবহন সমস্যার কারনে যথা সময়ে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করা সম্ভব হয় না। বিভিন্ন সময় অধ্যক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোন ফল পায়নি তারা।
কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক রাকিবুল হাসান বলেন, আবাসান থাকলেও ছাত্রদের বাসা ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে। আর্থিক অস্বচ্ছল ছাত্রদের মেস কিংবা বাসা ভাড়া করা কষ্টসাধ্য। তাদের কথা চিন্তা করে অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেও ছাত্রদের ছাত্রাবাসে থাকার ব্যবস্থা করা যায়নি।
কলেজটির প্রাক্তন ছাত্র নুরন নবী গাজী জানান, উপজেলার বাইরে থেকে আসা ছাত্ররা ছাত্রাবাসে থাকতে না পারায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এতে তাদের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্ন নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে অনেককেই।
ছাত্রাবাসে থাকছেন এমন কয়েকজন শিক্ষক জানায়, ছাত্রাবাসটি ব্যবহারের উপযোগী নয় তবুও তাদের জন্য নির্ধারিত ডারমেটরি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় ছাত্রবাসেই থাকছেন তারা।
শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম বলেন, সন্ধ্যা নামলেই ক্যাম্পাসটি মাদক সেবীদের স্বর্গ রাজ্যে পরিনত হয়। তাই ক্যাম্পাসটি নিরাপদ রাখতে কষ্ট হলেও ছাত্রাবাসে থাকতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
অধ্যক্ষ প্রফেসর উমেশ চন্দ্র লোধ বলেন, ছাত্রাবাসটি শিক্ষার্থীদের থাকার উপযোগী নয়। এখানে প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাব রয়েছে। শিক্ষকদের ডরমেটরি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় ছাত্রাবাসটির কয়েকটি কক্ষ সংস্কার করে ব্যবহার করছে শিক্ষকরা।
No comments:
Post a Comment