মোঃ আব্দুর রাজ্জাক রাজা
নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার কাঁচা, আধাপাকা ও পাকা সকল সড়কের ধ্বংসের মূল ভূমিকায় অবৈধ ট্রাক্টর ও বালু উত্তোলনকারীরা। প্রশাসন কে তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব খাটিয়ে জনগণের যোগাযোগের অবলম্বনকে প্রতিমুহূর্তে পৌঁছে দিচ্ছে ভোগান্তির চরম পর্যায়ে।
এ সকল ট্রাক্টর এক দিকে যেমন ক্ষতি করছে রাস্তার তেমনি সৃষ্টি করছে ট্রাফিক জ্যামের। দূষিত করছে পরিবেশ, কমিয়ে আনছে কৃষি জমি। অন্যদিকে পেশীর জোরে নদ-নদী, খাল, বিল, জলাশয় থেকে অবৈধভাবে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন করে জলাশয়ের নাব্যতা বন্ধ করে ফেলেছে প্রায়। এ ছাড়াও প্রতি বছর সরকার বঞ্চিত হচ্ছে কোটি কোটি টাকার রোড ট্যাক্স থেকে। প্রতিটি গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন, ড্রাইভারদের লাইসেন্স এর টাকা পাচ্ছে না সরকার। অপর দিকে রাস্তা পাকা করার ২-৩ সপ্তাহের মধ্যেই ভেঙ্গে ফেলছে এ সব ট্রাক্টর।
জানা যায়, ধুবড়িয়া ইউনিয়নের বিষমপুরের নির্মান কাজ চলমান রাস্তায় ট্রাক্টর চলাচলে বাধা দেয়ায় ইউপি সদস্যকে মারপিট করেছে এই ট্রাক্টর সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার কাজী আবুল কালাম আজাদ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ঘটনাটি ঘটে বিষমপুরে গত ১৬ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকালে। ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার কাজী আবুল কালাম আজাদ ঐ ইউনিয়নের বিষমপুরে একটি রাস্তা পাকা করনের কাজ চলমান বিধায় পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারা ঠিকাদারের অনুরোধে জনসাধারনের সুবিধার্থে, কৃষি কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর প্রধান সড়কে চলাচল করতে মৌখিক ভাবে চালকদের নিষেধ করে। এই চালকরা জনসাধারণের কথা চিন্তা না করে এসব কাকরা গাড়ি চালিয়ে সংস্কার চলমান রাস্তা ভেঙ্গে ক্ষতি সাধন করে।
বিষমপুর গ্রামের আতোয়ার রহমান (গগন) এর ছেলে শাওন (২২) ও আব্দুল গনি এর ছেলে কাউছার এ সকল কাকরা গাড়ীর চালানের জন্য ইউপি সদস্য কাজী আবুল কালাম আজাদ কে মারপিরট করে। গগন এর পিতার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মেম্বার মার খাওয়ার কাজ করছে তাই আমার ছেলে তাকে মেরেছে। আপনি পারলে লিখে দেন পত্রিকায়।
এছাড়াও তিনি বেশ কয়েজন ক্ষমতাশালী ব্যক্তিবর্গের নাম ব্যবহার করে বলেন, আপনি ছাপিয়ে দেন দেখি কি হয় তাতে।
জনকল্যাণমুখী ইউপি সদস্য এ প্রসংগে বলেন, আজ আমি দেশের সম্পদ রক্ষায় মার খেয়েছি। আমি এক জন জন প্রতিনিধি। আমাকেই মেরে গাড়ি চালাচ্ছে এই চক্র। সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করলে কি করত এর বলা বাহুল্য।
সরেজমিনে দেখা যায় নাগরপুর উপজেলার এমন কোন রাস্তা নেই যেখানে এ সকল অবৈধ ট্রাক্টর চলে না। এদের যন্ত্রনায় জনজীবন আজ হুমকির মুখে। প্রতি বছর এ সব দানবাকৃতির যন্ত্রের চাকায় পিষ্ট হয়ে বহু মানুষ প্রান হারাচ্ছে। বাদ পরেনি সেনা সদস্যও।
সহবতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নাগরপুর ট্রাক্টর সমিতির সভাপতি মো. আনিছুর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করতেই আমরা এসব ব্যবহার করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গ্রামকে শহরে রুপান্তর করার অন্তরায় ট্রাক্টর এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এলাকা নিচু। তাই সকল রাস্তায় এখনও ট্রাক চলার উপযোগী নয়, একারনেই এসব যান এখনও রাস্তায়।
সাধারণ সম্পাদক বারেক বলেন, আমাদের সমিতিতে ১৫৪ টি গাড়ি আছে। আমরা কল্যান সমিতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকি এবং বিভিন্ন খরচের জন্য নাম মাত্র টাকা উত্তোলন করি। এ সকল রেজিষ্ট্রেশন বিহীন কাকরা গাড়ী কিভাবে উপজেলার সকল প্রধান সড়কে চলাচল করে সে বিষয়ে তিনি বলেন, সারা দেশে যেভাবে চলে আমাদের এখানেও একইভাবে চলে। তবে আমরা বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের কাজে সহায়তা করে থাকি।
No comments:
Post a Comment