নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি।।
নেত্রকোনা জেলার পুর্বধোলা উপজেলার একটি গ্রামের নাম "চোরের ভিটা। এ ‘গ্রামের নামডা বললে মানুষ হাসে। এমন নাম বলতে ভালো লাগে না, লজ্জা লাগে। কয় বাপ-দাদা কি চোর আছিন? না অইলে এমন নাম কেরে? এইতার লাইগ্যা গ্রামের নামডা কইতে শরম লাগে। মামার বাড়িত গেলে, কোন জায়গায় বেড়াইতে গেলে মানুষ বাবার নাম, গেরামের নাম জিগায়।’
বলছিল নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চোরের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মো. জোনায়েদ তালুকদার। সে চোরের ভিটা গ্রামের মো. আজিম উদ্দিন তালুকদারের ছেলে।
একই গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হাবিবা আক্তার ও তামান্না আক্তার বলেন, ‘মানুষ ইসকুলের নাম কইলে হাসে। আমরার খুব খারাপ লাগে। নামডা বদলায়া দেহুয়ান। মাইনষেরে কইতে ভালা লাগে না।’
গ্রামের নাম পরিবর্তন চেয়ে বুধবার নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের সাবেক ছাত্র মোহাম্মাদ মাহবুবুর তালুকদার।
তিনি বলেন, পূর্বধলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চোরের ভিটা গ্রামের নামকরণ করা হয় ১৯৬২ সালে। ওই সময়ের জরিপের সময় জমিদারের খাজনার বই হারিয়ে গেলে জমিদার ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রামের নাম দেন চোরের ভিটা। ১৯৯১ সালে গ্রামের নামের ওপর ভিত্তি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় ‘চোরের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। আমি নিজেও ওই স্কুলের ছাত্র। কিন্তু বিভিন্ন অফিস আদালতে গেলে, চাকরির আবেদন করলে তা নিয়ে মানুষ হাস্যরসের সৃষ্টি করে।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। তাই নামটি বদলের জন্য মানববন্ধন করেছি। জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছি। নামটি পরিবর্তন চাই আমরা। পরিবর্তন করে বিজয়নগর করার জন্য দাবি জানাই।
একই গ্রামের বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা হালিম খান ও মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, এমন নামের কারণে মানুষ আত্মীয় করতে চায় না। বিয়েশাদীর ক্ষেত্রে ভালো এলাকায় বিয়েশাদী হয় না। আমরা খুব সমস্যায় আছি। দ্রুত গ্রামের নামটি পরিবর্তন চাই।
No comments:
Post a Comment