৬ই জুন২০২০ ইং
করোনার ভয়াবহতার অকল্পনীয় ধ্বংসযজ্ঞের পূর্বেই কার্যকর স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনে জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল গঠনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.ছানোয়ার হোসেন তালুকদার নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।
প্রতিদিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, মৃতের সংখ্যাও উর্দ্ধমুখী। করোনা বিস্তারের গতি রোধ করতে না পারলে জাতিকে অকল্পনীয় ধ্বংসযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করতে হবে। এ সব আশঙ্কা আর উদ্বেগ জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে এখনই সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজাতে হবে। সংস্কার কাজে হাত দেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। সমস্ত জাতি অতি দুঃখের সাথে ও চরম মূল্যের বিনিময়ে আজ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা আর করুণ অবস্থা প্রত্যক্ষ করছে। কার্যকর একটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অধীর আকাঙ্খায় জাতি উন্মুখ। স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারের লক্ষ্যে আসন্ন বাজেটে থেকেই সম্ভব সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিতে হবে।
জনমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা শুধুমাত্র চিকিৎসক বা কারো একক উদ্যোগের বিষয় নয়। এজন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নীতি, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে কার্যকর সংস্কারের লক্ষ্যে সমগ্র জাতিকে এই কর্মসূচীর সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। সে লক্ষ্যে জাতির সকল অংশীজনকে অন্তর্ভুক্ত করে অংশীদারিত্বমূলক পরিষদ অর্থাৎ ‘জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল’ গঠন করতে হবে।
জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে কার্যকর জাতীয় ঐক্যও গড়ে তোলা সম্ভব হবে,যা আজ পর্যন্ত দলীয় আত্মম্ভরিতার কারণে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি।
করোনা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এটা আজ প্রমাণিত যে, চিকিৎসা পেশায় যারা সংশ্লিষ্ট শুধুমাত্র তাদের দ্বারাই স্বাস্থ্যে ব্যবস্থার সংস্কার সম্ভব নয়। তাই জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিলে চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের পাশাপাশি সমাজের অন্যান্য অংশের প্রতিনিধিত্বের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তাই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সংস্কারের লক্ষ্যে জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিলে চিকিৎসা পেশায় সংশ্লিষ্টদেরসহ জ্ঞান বিজ্ঞান মেধা ও প্রযুক্তির অধিকারী সাংবাদিক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিসেবী, ব্যাংকার, এনজিও, পুলিশ, আনসার, প্রতিরক্ষা বাহিনী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, শ্রমিক, কৃষক, ক্যাডার সার্ভিস, কর্মচারী, নারী, সমাজের অনগ্রসর অংশ ও উপজাতি সমূহের প্রতিনিধি অর্থাৎ সকল শ্রমজীবি কর্মজীবী ও পেশাজীবি সংগঠন সমূহের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিলের কাজ হবে একটি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রনয়ণ। জনগণের চাহিদা পূরণে স্বাস্থ্যবিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে এর একটি প্রধান লক্ষ্য। জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আসন্ন বাজেট থেকেই এর অর্থায়ন করতে হবে।
আসুন একলা চলো নীতি পরিহার করে অবিলম্বে জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল গঠন করে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর একটি জনমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলি।
দপ্তর সম্পাদক
জেএসডি
No comments:
Post a Comment