রামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে চার ইটভাটায় বিবর্ন হয়ে পড়েছে উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রাম। গ্রামটি ছিলো সবুজে ঘেরা, যা পশু পাখির কলকাকলিতে থাকতো মুখরিত। কিন্তু কয়েক বছর আগে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা চারটি ইটভাটার প্রভাবে গ্রামটি বিবর্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া উপজেলার ২২ টি ইটভাটার মধ্যে ১৪ টি অবৈধ বলে জানা গেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ ইটভাটা গুলো চলছে। জাতীয় ও স্থানীয় প্রায় সব কর্মসূচীর নামে ভাটা মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হয়। সে কারনে প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ জনবসিত পূর্ন এলাকায় অবৈধ ভাবে ইটভাটা গড়ে উঠায় তাদের কষ্টের শেষ নেই। সে সাথে কমে গেছে কৃষি উৎপাদন। কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ইজাড়া নিয়ে এসব ইটভাটা তৈরি করছে প্রভাবশালীরা। এসব ইটভাটা বন্ধ করতে প্রশাসনের কাছে জোরদাবী এলাকাবাসীর। প্রভাবশালী ভাটা মালিকদের ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে ভয় পায়।
আইন অনুযায়ী কৃষি জমি দখল করে জনবসতী পূর্ন এলাকা থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে, কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪৫০ মিটারের মধ্যে ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। কিন্তু কয়েক বছরে উপজেলা ভোলাকোট ইউনিয়নে দেহলা গ্রামে চারটি ভাটা গড়ে তোলা হয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, দেহলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে কৃষি জমিতে ১০বছর আগে দেহলা গ্রামে আমির হোসেন ডিপজল এমবিএফ ব্রিক নামে একটি ইটভাটা স্থাপন করেন। কয়েক বছর পর পাশে আরেকটি ইটভাটা স্থাপন করে ডিপজল।এর পাশেই রয়েছে জেবিএম ব্রিকস ও মক্কা ব্রিকস নামের আরো দুটি ইটভাটা। বর্তমানে ভাটা গুলোতে কয়লার সাথে পোড়ানো হচ্ছে পুরানো টায়ার ও রাবার। এছাড়া ইট তৈরির জন্য দলালদের মাধ্যমে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিয়ে আসা হয়। তারা জমির মালিকদের অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে মাটি কেটে নিয়ে পাশের কৃষি জমি জলাশয়ে পরিনত করছে। ভাটার ইট ও মাটি ট্রলি কিংবা ট্রাক্ট যোগে আনা নেওয়ার কারনে উপজেলার সড়ক গুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় ঐ এলাকার বাসিন্দারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন ফলজ, বনজ গাছ বিবর্ন হয়ে যাচ্ছে।
জেবি এম ইটভাটার মালিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিভিন্ন দিবসের নামে উপজেলা প্রশাসন টাকা নিচ্ছে। এগুলো লিখে কি হবে? এদেশে অনিয়মই নিয়ম।
ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির আহাম্মেদ মানিক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশেই কৃষি জমিতে কিভাবে অবৈধ ভাবে চারটি ইটভাটা স্থাপন করল তা আমার জানা নেই।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার গুনময় পোদ্দার বলেন, ইটাভাটার নির্গত ধোঁয়ায় মানুষের চর্মরোগ ও শ্বাসকষ্ট সহ নানা রোগ বালাই দেখা দেয়। এছাড়া পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান বলেন, ইতিমধ্যে দুইটি ইটভাটায় জরিমানা করা হয়েছে, যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
No comments:
Post a Comment