ফিল্মের নায়িকাদের প্রতি প্রবল আকর্ষণ। তাদের মতো নাচতে ইচ্ছে করে। নাচে-অভিনয়ে তাদের মতোই হতে ইচ্ছে কিশোরীর। মা অন্য সংসারে। দরিদ্র বাবা কাজ করেন ডেমরা এলাকার একটি জুট মিলে। দাদা, দাদীর সঙ্গেই থাকতো কিশোরী। অসহায় মেয়েটি তার স্বপ্নের কথা বলতো প্রতিবেশী ২৮ বছর বয়সী নারী মুন্নীর সঙ্গে। এই গল্পই কাল হয় দাঁড়ায়।
নায়িকা হতে হলে ভালো নাচ জানতে হবে। নাচ শেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী মেয়েটিকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যায় মুন্নী। সেখান থেকেই এক কুৎসিত অন্ধকার রাজ্যে যাত্রা শুরু মেয়েটির। নারায়ণগঞ্জ থেকে সীমান্তবর্তী এলাকা যশোর। নিজের অজান্তে এভাবেই অন্ধকারে হারিয়ে যায় কিশোরী। দীর্ঘ ৯ মাস নির্যাতন করা হয়েছে তাকে। শেষ পর্যন্ত ফিরেছে সেই মেয়েটি। পুলিশ হেফাজতে তদন্তকারীদের কাছে মেয়েটি জানিয়েছে লোমহর্ষক সেই নির্যাতনের কথা। এখনও ভয়ে আঁতকে উঠে কিশোরী। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন নারীসহ পাঁচ জনকে। ইতিমধ্যে আদালতে অপরাধ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে চার জন।
১৪ বছর বয়সী নির্যাতিতা একজন স্কুল ছাত্রী। তার পিতা জানিয়েছেন, ডেমরা উত্তর বাজারের মনির হোসেনের স্ত্রী মুন্নীর বাসায় যাতায়াত করতো কিশোরী। মেয়েটি তার পিতাকে জানিয়েছিলো, মুন্নী তাকে নাচের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবে। মেয়ের শখের পথে বাধা হননি বাবা। মুন্নীর প্রতিও বিশ্বাস ছিল। তারপর পরিবারের সবার অজান্তেই গত বছরের ১০ই মার্চ হারিয়ে যায় কিশোরী। নির্যাতিতা কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থানার তাড়াবো এলাকায় রনি ও পারুল ওরফে নাসরিন দম্পতির বাসায় নিয়ে যায় তাকে। এসময় মুন্নীর সঙ্গে তার শিশু সন্তান ও লাবু নামে এক যুবক ছিলো। ওই বাসায় তাকে জোর করে আটকে রাখা হয়। ওই বাসাতেই কিশোরী মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়। বাধা দিলে বেদম মারধর করা হয় তাকে। কান্না করার চেষ্টা করলেও মারধর করা হয়। প্রাণে মারার ভয় দেখানো হয় তাকে। এভাবে ওই বাসাতেই একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয় কিশোরী। এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে যায়।
No comments:
Post a Comment