শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধিঃ আগামী ১৬ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় মজুরি কমিশন-২০১৫ প্রদান করা হবে, এ আশ্বাসের পর কাজে যোগ দিয়েছেন খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের শ্রমিকরা।
টানা পাঁচ দিন আমরণ অনশন কর্মসূচির পর শনিবার (৪ জানুয়ারি) ভোর থেকেই কাজে যোগ দিতে শুরু করেন তারা। ফলে মিলে উৎপাদন শুরু হয়। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে গোটা শিল্পাঞ্চলে।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন সকাল ৯টায় বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে মজুরি কমিশনের স্লিপ দেওয়া হবে মর্মে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি। আগামী ১৬ জানুয়ারি আমাদের স্লিপ দেওয়া হবে। শনিবার ভোর ৬টা থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেছেন।
তিনি বলেন, দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পাটকল খুলনায়। খুলনার সাতটি পাটকলে স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। যারা সবাই কাজে যোগদান করেছেন।
মিলগুলো হচ্ছে- ক্রিসেন্ট জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, স্টার জুট মিল, আলিম জুট মিল ও ইস্টার্ন জুট মিল। ফলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে শিল্পাঞ্চলে।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্রে জানা যায়, আমরণ অনশনের সময় খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব ৯ পাটকলের মধ্যে যশোরের জেজেআই ও কারপেটিং জুট মিল বাদে বাকি সাতটি পাটকলের উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। এ পাটকলগুলোতে প্রতিদিন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। সেখানে চালু থাকা ওই দু’টি পাটকলে উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৮৬ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন। পাটকলগুলোতে প্রতিদিনের উৎপাদিত পণ্যের বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। সেই হিসেবে শ্রমিকদের ৫ দিনের অনশনে ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শ্রমিকদের দাবি নিয়ে ২০১৯ সালের ১৫, ২২ ও ২৬ ডিসেম্বর তিন দফা বৈঠক হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি। সর্বশেষ ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় ওই দিন ২৯ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আবারও ১১ দফা দাবিতে অনশন করার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। সেই অনুযায়ী শ্রমিকরা অনশন কর্মসূচি পালন করেন।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের বৈঠক শেষে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পাটকল শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হবে বলে ঘোষণা দেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। এরপর অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা।
No comments:
Post a Comment