রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জে দখল হয়ে যাচ্ছে অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকা বধ্যভূমি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানে গড়ে উঠছে বহুতল ভবনসহ নানা প্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধা সহ স্থানীয়রা। বধ্যভূমি দখলমুক্ত করে সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় দখলদাররাও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে বিজয় অর্জন পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের জায়গাটিতে গণকবর দেয়া হয়েছিল অন্তত ১০০ জনেরও বেশী মুক্তিযোদ্ধা এখানে গণকবর দেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের গাফিলতিতে এই বধ্যভূমিতে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। নতুন করে স্থাপনা নির্মাণেরও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। তাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধের পর দীর্ঘ বছর পার হলেও প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জমির মালিক তাদের কাছে বধ্যভূমির জমিটি বিক্রি করে দিয়েছেন।
শহীদ পরিবারের কয়েকজন সন্তান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরেও বীর শহীদদের সম্মান জানানো হচ্ছে না। জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বধ্যভূমির জমি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। প্রশাসনও প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারছে না। জমিও অধিগ্রহণ করছেন না তারা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সালেহ আহম্মেদ পাটওয়ারী ও মুক্তিযোদ্ধা মানিক মাল জানান, রামগঞ্জে এম ইউ হাইস্কুলের উত্তর পাশে সেনের বাড়ি পুকুরে শহীদ কালা মিয়া সহ অন্তত শতাধিক মৃতদেহ ফেলেছে পাকিস্তানি বাহিনী। ওই স্থানটিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য বলা হলেও পরবর্তীতে অদৃশ্য কারণে হয়নি। অথচ ৭১ সালে রামগঞ্জের সবচেয়ে বেশি মৃতদেহ ফেলেছে সেনের বাড়ির পুকুরে। এছাড়া ওয়াপদা চোরাস্তা মোড়েও বধ্যভূমি রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এখনো পর্যন্ত তা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। দ্রুত সেনের বাড়িসহ ব্যক্তি মালিকানা বধ্যভূমিগুলো অধিগ্রহণ করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান তারা।
স্থাপনা নির্মাণকারীরা জানান, সরকার স্বাধীনতার পর থেকে অধিগ্রহণ করবে বলে আর করেনি। তাই জমির মালিক বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন বসবাসের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। ইতোমধ্যে ওই জমিতে তিনতলা বিল্ডিং নির্মাণ হয়েছে।
এদিকে বধ্যভূমির জায়গাতে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে জানতে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মীরা কোন বক্তব্য নারাজ।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে ৯ মাসে পাক হানাদারদের সঙ্গে অনেক গুলো সম্মুখযুদ্ধ হয় রামগঞ্জে।
এর অধিকাংশ যুদ্ধে অংশ নেয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
No comments:
Post a Comment