রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে দ্বাদশ শ্রেনীর এক কলেজ ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক মহসিন এর বিরুদ্ধে। মাতব্বরদের চাপে ঐ কলেজ ছাত্রী বর্তমানে অনত্রে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ঘটানাটি ঘটেছে উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের দল্টা গ্রামের তিনই ভূঁইয়া বাড়িতে।
২৫ ফেব্রুয়ারী উপজেলার ভাটরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মিঠু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
গত এক বছর থেকে ঐ ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে বিয়ের প্রলোভনে একাধিক বার অনৈতিক কর্মকান্ডে ঘটনা ঘটে। এরই ধাবাহিকতায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারী ঐ কলেজ ছাত্রীকে নিয়ে কুমিল্লার বরুড়া একটা ভাড়া বাসা ৪ দিন স্বামীর -স্ত্রীর ন্যায় বসবাস করে। ৪র্থ দিন সকালে ছাত্রীকে বিয়ের কথা বললে মহসিন গোপনে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে কোন উপায়ান্তর না দেখে লোকলজ্জার ভয়ে রামগঞ্জে খালার বাড়িতে আশ্রয় নেয় ঐ কলেজ ছাত্রী।
এরপরে মহসিন পালিয়ে ঘাডাকা দিয়েছে। পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মিঠুকে জানিয়েছে ঐ কলেজ ছাত্রী। অভিযুক্ত মহসিন মাতব্বর রাশেদের আস্থাভাজন হওয়ায়
চেয়ারম্যান বিষয়টি স্থানীয় মাতব্বর মহসিন হোসেন রাশেদ খলিফাকে সমাধানের দ্বায়িত্ব দেন।
পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাজানি হলে উল্টো মহসিনের পিতা মেয়ের পরিবারের বিরুদ্ধে ১৭ ফেব্রুয়ারী মেয়ের পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় একটি মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে সমাজের গন্যমান্য ব্যাক্তিদের চাপে ঐ অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে ২১ ফেব্রুয়ারী রবিবার রাতে সালিশ বৈঠকে ঐ ছাত্রলীগ নেতার পরিবারকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন গ্রামের মাতব্বররা।
মহসিনের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনাটি মীমাংসার জন্য তিনশত টাকার স্ট্যাম্পে বোঝাপড়াও হয়েছে। পরে স্থানীয় কথিত আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদ খলিফার নেতৃত্বে আলী মেম্বার, হুমায়ুন তরফদার, দেলোয়ার সহ গ্রাম্য সালিসে ওই কলেজ ছাত্রীর ইজ্জতের মূল্য ১ লাখ টাকা ধরা হলেও একটি টাকাও দেওয়া হয়নি ঐ ছাত্রীর পরিবারকে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মহসিন এর পিতা আবদুল কাদের বলেন, এটা আমাদের পারিবারিক ইন্টারনাল বিষয়। আমরা বাড়ির লোকজন ঐ ছাত্রীর ভবিষ্যতে বিয়ের বিষয়ে যাবতীয় খরচপাতি বহন করার মর্মে শালিশির মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রীর পিতা আবুল কালাম জানায়, শালিশদের তিনশত টাকার ষ্ট্যাম্প হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না, আমার মেয়ে কোথায় আছে তা জানিনা শালিশদাররা বলতে পারবে।
শালিশী সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা রাশেদ খলিফা বলেন, কলেজ ছাত্রীর পিতার সাথে অভিযুক্ত মহসিনের পরিবারের সাথে টাকা লেনদেনের বিষয়ে বিরোধ রয়েছে। আমরা শালিশ বসে তা সমাধান করে দিয়েছি।
ভাটরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ ওয়াসিম বলেন, বিষয়টি আমি মেয়ে পক্ষের কাছ থেকে শুনেছি তবে মহসিনন পলাতক থাকায় বিস্তারিত জানা যায়নি।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি কামরুল হাসান ফয়সাল মাল বলেন, কারো ব্যাক্তিগত অনৈতিক কর্মকান্ডের দায়ভার ছাত্রলীগ নিবে না।
রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ঘটনাটি যেহেতু কুমিল্লার বরুড়ায় হয়েছে সেখানে গিয়ে মামলা করা উচিৎ।
No comments:
Post a Comment